আজ মঙ্গলবার, ৫ই ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সেই মমতাজের ঈদ উপহার পেয়ে তারা আনন্দিত

নবকুমার: ইচ্ছা থাকলে সবই করা সম্ভব । এমন কথা খাটলো রূপগঞ্জের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগমের ক্ষেত্রে। তিনি অনির্বাণ ডিজেবল চাইল্ড কেয়ার স্কুল এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নতুন পোশাক এবং নগদ অর্থ দিয়েছেন।তার ঈদ উপহার পেয়ে আনন্দিত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই শিক্ষার্থীরা। মমতাজ বেগম রূপগঞ্জে দায়িত্ব পালন কালে প্রায় সময় তিনি তাদের খোঁজ খবর নিতেন। এবার পবিত্র ঈদুল আযহা যখন সবার ঘরে ঘরে আনন্দের বার্তা দিচ্ছে রূপগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভুক্ত এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের খোঁজখবর কেউ নেয়নি। অসহায় এই শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের বার্তা নিয়ে ৩০ জুলাই রাতে এলেন মমতাজ বেগম। সারাদিন সরকারী আদেশ পালন করে সন্ধায় ছুটে এসেছেন অনির্বাণ ডিজেবল চাইল্ড কেয়ার স্কুল এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার এর এই শিক্ষার্থীদের কাছে। এই অবহেলিত শিশুদের তিনি বুকে টেনে নিতে কখনও সংকোচ করেননি। তাদের সাথে তিনি কিছু সময় আনন্দ করেছেন। ঈদ উপহার তুলে দিয়েছেন হাজারও প্রতিবন্ধকতার স্বীকার প্রতিবন্ধী নামক বিশেষ শিক্ষার্থীদের হাতে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অনির্বাণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ঈদুল ফিতরে ( ২৫ মে  ) কাঞ্চনে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত শিশু পরিবারের ৯৮ টি এতিম বাচ্চাদের সাথে তিনি ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। সেখানে শিশুদের সাথে মমতাজ বেগম দুপুরের খাবার খান । এবার তিনি রূপগঞ্জে নেই তারপরও তিনি তাদের ভুলে যাননি।

প্রসঙ্গত, মমতাজ বেগম (মম) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। পেশাগত দক্ষতাসহ বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে জেলা পর্যায়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০১৯-২০ পেয়েছেন তিনি । এর আগে বিভাগীয় বিভিন্ন পুরস্কার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা, সততা, উদ্ভাবন, ই-ফাইলিং, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, অভিযোগ প্রতীকারে সহযোগিতাসহ শুদ্ধাচার চর্চা বিষয়ক বিভিন্ন সূচকে সন্তোষজনক অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন । তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগেরর একটি হলের সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে করোনা দুর্যোগে তিনি গোটা এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে অনুকরণীয় মানবিক কর্মকর্তা। রূপগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই তিনি জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষের সেবায় কাজ করেছেন। ঘরে দেড় বছরের সন্তান রেখে লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষের বাড়িতে ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাতের আধারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন।

তার এ কাজে মুগ্ধ রূপগঞ্জবাসী। রূপগঞ্জের ইতিহাসে তিনিই রূপগঞ্জের সফল ইউএনও । তার কর্মই তাকে রূপগঞ্জবাসীর হৃদয়ে বাঁচিয়ে রাখবে।
জানা গেছে, রূপগঞ্জের ইউএনও হিসেবে গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন মমতাজ বেগম। আর দায়িত্ব নিয়েই তিনি উপজেলার মানুষের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেন। বাল্যবিয়ে ও যৌতুকপ্রথা বন্ধ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, সরকারি জমি উদ্ধার, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং মাদক নির্মূলে একের পর এক অভিযান চালান। আর জনহিতকর এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে তিনি এলাকার মানুষের অতি কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন। রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্তরে তিনি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিমাণ করে দিয়েছেন। সেখানে এখন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এখন শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

মমতাজ বেগম বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুরা আমাদের সমাজের একটি অংশ । সবার উচিত তাদের পাশে থাকা। ওদের বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুদা দারিদ্র মুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা নিমাণ করা সম্ভব নয়। সরকার তাদের জন্য কাজ করছে। আমি চেষ্টা করি সব সময় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পাশে থাকার।

এছাড়া তিনি পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ